দখিনের খবর ডেস্ক ॥ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করায় নড়াইলে দায়ের করা মানহানি মামলায় বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নড়াইল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট-২ এর বিচারক আমাতুল মোর্শেদা এই রায় দেন। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (জিয়া) ইস্ট লন্ডনের এন্ট্রিয়াম ব্যাংক ওয়েট হলে বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য দেন। সেই সংবাদ দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। নড়াইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহাজান বিশ্বাস ওই সংবাদ পড়ে ক্ষুব্ধ হন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানহানি হয়েছে মর্মে নড়াইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ মানহানি মামলা করেন। মামলায় তিনজন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। সরকার পক্ষে কৌঁসুলি সঞ্জিব কুমার বসু বলেন, রায়ে বাদী ও জেলা আওয়ামী লীগ সন্তুষ্ট। বিএনপির প্রতিবাদ: দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কারাদণ্ডাদেশের ঘটনায় রায়ের কয়েক ঘণ্টা পর পাঠানো বিবৃতিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এর প্রতিবাদ করা হয়। বিবৃতিতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশে-বিদেশে কয়েকটি চলমান ঘটনা থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে-বিদেশে সরকারের অপশাসন, কুশাসন প্রচার তড়িঘড়ি করে আড়াল করার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সাজানো মামলা সরকারের নির্দেশে নড়াইলের আদালত ফরমায়েশী যে রায় দিয়েছে তা সম্পূর্ণরুপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সত্য উচ্চারণের কারণে মানহানি মামলায় এ ধরনের রায় নজীরবিহীন ঘটনা। এই ঘটনায় পরিস্কারভাবে বোঝা যায় যে, আইন-আদালত সরকারের হাতের মুঠোয়। মূলতঃ নানা অপকীর্তির কারণে বর্তমানে দেশে-বিদেশে এই সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে বিনষ্ট। এই কারণে সরকার বেপরোয়া ও উন্মাদ হয়ে জনদৃষ্টিকে ভিন্নখাতে নিতে একতরফা বিচারিক প্রক্রিয়া চালিয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রায় দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নড়াইলের আদালতের রায় কুটিল মাষ্টারপ্ল্যানেরই অংশ, বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মানুষের বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কন্ঠরোধ করা হয়েছে গণমাধ্যমের। কেউ সত্য উচ্চারণ করলেই তার ওপর নেমে আসে নির্মম নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার খড়গ। এই মামলাটিও এর ব্যতিক্রম নয়। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের ভয়াবহ নির্যাতন ও নিপীড়নে শুধু গণমাধ্যম নয়। গোটা জাঁতি এখন সেল্ফসেন্সরশিপে ভুগছে। এর মধ্যে সরকারের কিছু অপকর্ম বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সেটির উপযুক্ত ব্যাখা না দিয়ে বরং তারেক রহমানকে সামনে আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় সাজা দিয়ে। তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে মামলা ও আদালতের রায় সরকারের ইচ্ছাতেই নির্দেশিত হয়। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানহানির মামলার এই নজীরবিহীন রায়ও বর্তমান সরকারপ্রধানের ইচ্ছারই প্রতিফলন। আমি এই রায় প্রত্যাখান করে রায়ের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এই রায় প্রত্যাহারের জোর আহবান জানাচ্ছি।
Leave a Reply